পৃথিবীতে এত ধর্ম কেন?


এটা কিভাবে সম্ভব যে, পৃথিবীতে এতগুলো ধর্ম থাকা সত্ত্বেও মাত্র একটি ধর্মই সত্য? বাকি গুলো তবে কি? সবই কি মিথ্যা আর বানোয়াটি? ওই সব ধর্মের মহান ধর্মপ্রচারকরা কি তবে ভন্ড? তারা কি তবে ইশ্বরের দূত নয়? যদি তাই হয়ে থাকে তবে সেই একটি ধর্ম এবং ধর্মগুরু ছাড়াও বাকি গুলো এত জনপ্রিয়তা বা বিস্তৃতি লাভ করল কিভাবে?

এসব প্রশ্ন অনেক মানুষের মনেই জাগে। এটা স্বাভাবিক। এসবের উত্তর না জানার কারনে অনেকে সত্য থেকে দূরে থাকেন। অথবা সত্যকে জানার উতসাহ হারিয়ে ফেলেন। ইসলাম মুহাম্মাদ (সা.) -এর পূর্বের কোন ধর্মকেই সরাসরি সৃষ্টিকর্তার ধর্ম নয়, বলেনা। সেগুলো আল্লাহর দ্বীন এক সময় হলেও হতে পারে। ইসলাম বলে পৃথিবীতে এক লক্ষ্য চব্বিশ হাজার নবী বা ইশ্বরের দূত এসেছেন। মহান আল্লাহই তাঁদের নবী করেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন ভু খন্ড, সম্প্রদায় বা ভাষাভাষির লোকের কাছে নবী এসেছে। তাদের কাছে ধর্মের বাণী প্রচার করেছে। ইহুদি ধর্ম এক সময় আল্লাহর ধর্ম ছিল। খ্রিস্টান ধর্মও ছিল আল্লাহর মনোনীত দ্বীন। মুশা/মোজেস এবং ঈশা/যীষু (তাঁদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক) আল্লাহর সন্মানিত নবী ছিলেন। কিন্তু মানুষ সময়ের সাথে তাঁদের বাতলে দেওয়া ধর্মকে পালটে ফেলেছে।

যখন এক নবীর বাতলে দেওয়া ধর্ম বা জীবন ব্যবস্থাকে মানুষ পালটে ফেলে, বদলে দেয়। এক আল্লাহর ইবাদত না করে যখন শিরক করা শুরু করে তখন আল্লাহ আবার নবী পাঠান। এভাবেই এত নবী এসেছেন দুনিয়ায়। যখন মুশার (আ) ধর্মকে ইহুদিরা বদলে ফেলল তখন আল্লাহ যীষুকে (আ) পাঠালেন। কিন্তু কিছু লোক তাকে আল্লাহর নবী বলে স্বীকার করল আবার কিছু লোক তাঁর বিরোধীতা করে শত্রুতা শুরু করল। ঠিক একই ব্যাপার হয় মুহাম্মাদ (সা.) এবং অন্যান্য নবীদের সময়েও। ঠিক এই কারনেই পৃথিবীতে এত ধর্ম।

এবার কথা হল, যদি বিখ্যাত সব ধর্ম এবং ধর্মগুরু আল্লাহর মনোনীত হয় তবে কেন ইসলাম মেনে চলতে হবে? উত্তরটা খুব সহজ। বাকি ধর্ম গুলো আর খাঁটি নেই। মানে বদলে গেছে, বিকৃত হয়েগেছে, পরিবর্তিত হয়েগেছে। আর একথা শুধু আমরা বলছিনা। পৃথিবীর তাবর তাবর ঐতিহাসিক, বিষেশজ্ঞরা বলেন। যেমন বিবেকানন্দ বলেছেন বেদের ৯০% পরিবর্তিত হয়েগেছে। আর কুর’আন যখন নাজীল হয় তখন সঙ্গে সঙ্গে তা লিখে ফেলা হত। তাই হাজার বছর আগের চামড়ায় লেখা কুর’আন, আমেরিকার কংগ্রেস লাইব্রেরির কুরান, ইস্তাম্বুলের মিউজিয়ামের কুরান কিংবা আপনার বাড়ির পাশের বইয়ের দোকানের কুরানের মধ্যে কোন তফাত নেই। অথচ বাজারে প্রায় ৬৬ রকমের আলাদা আলাদা বাইবেল পাওয়া যায়।

আরেকটা প্রশ্ন মনে জাগতে পারে, মুহাম্মাদের (সা) পর আর কোন নবী আসবেনা কি? উত্তর হল হ্যাঁ আসবেন। তবে তিনি আসবেন মুহাম্মাদের (সা.) অনুসারী হয়েই। তিনি নতুন কিছু প্রচার করবেন না। ইসলামের কথায় প্রচার করবেন। তিনি হলেন যীষু (আ)। তাঁর অনুসারীরা বাড়াবাড়ি করে তাঁকে আল্লাহর নবী থেকে আল্লাহর সন্তান বানিয়ে ফেলেছেন। সেই মিথ্যাচার দূর করবেন তিনি।

About সম্পাদক

সম্পাদক - ইসলামের আলো
This entry was posted in অমুসলিমদের চোখে ইসলাম, ইসলাম ও অনান্য ধর্ম. Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান