লিখেছেন – শেখ ফরিদ আলম
একটা খবর দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেল। একজন মহিলাকে বিয়ের পর যৌতুকের জন্য এতটা অত্যাচার করা হয়েছিল যে, সে বাধ্য হয়ে নিজের কিডনি বিক্রি করে টাকা দিয়েছিল শ্বশুর বাড়িতে। কিন্তু তাতেও তাদের মন ভরেনি। অত্যাচারের মাত্রাও কমেনি। তাই বাধ্য হয়ে নিজের গা’য়ে আগুন দিয়েছেন সেই মহিলা। বর্তমানে যৌতুকের নামে কত নারীকে স্বাভাবিক সুখ থেকে বঞ্চিত করা হয়, অকারণে অত্যাচার করা হয়, পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়, আত্মহত্যা করার জন্য প্ররোচনা দেওয়া হয়, ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তার হিসেব করা কঠিন। এটা অনেক বড় সমস্যা এবং নারীদের সাথে চরম অন্যায়। সবথেকে খারাপ লাগে যখন দেখি, মানুষ পণ দেওয়া নেওয়াকে খারাপই মনে করেনা। এটাকে স্বাভাবিক করে নিয়েছে। পণ আর কেউ চোরের মতো চাই না, বুক ফুলিয়ে চাই। কত বেশি হারামের টাকা ঘরে তুলতে পারলাম তারও প্রতিযোগিতা চলে।
শুধু যে ছেলেপক্ষ যৌতুক চাই বলে দিতে হয় তা নয়। বর্তমানে সমাজে অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে যৌতুক প্রথা। মেয়েপক্ষও এটাকে নিজেদের জন্য ফরয মনে করে ফেলেছেন। যেন দিতেই হবে, না দেওয়াটা অন্যায়। অনেকে আবার বলেন, আমাদের কোন ডিমান্ড নাই। শখ করে যা দেওয়ার দেবেন। শখ করে দিতে পারবেনা এমন বলছিনা কিন্তু শখটাও এমন হওয়া উচিত না যা মেয়ের বাবার মেরুদন্ডই ভেঙ্গে ফেলে। ধারদেনায় ডুবিয়ে ফেলে। কত পরিবারকেই মেয়ের বিয়ে দিতে দিতে নিঃস্ব হয়ে যেতে দেখেছি। জমি জায়গা বিক্রি করে, চেয়ে, চাঁদা তুলে বিয়ে দিতেও দেখেছি অনেককেই। অথচ, এমন হওয়া উচিত ছিলনা। যৌতুকের কারণে বিয়ে সমাজে কঠিন হয়ে গেছে। আবার এমন লোকও দেখা যায় যারা মেয়ের বিয়েতে যা দিয়েছে তার থেকেও বেশি ডিমান্ড করে ছেলের বিয়েতে। আর মেয়েকে দিয়ে থাকলে ছেলের জন্য চাইতে কোন রকমের লজ্জা বা সংকোচও করেনা।