ড. বিলাল ফিলিপ্স
ব্রাজিলের অ্যামাজন জঙ্গলের আদিম উপজাতিদের একদল মানুষ স্কোয়াচ নামক মূর্তির পূজা করে। তাদের বিশ্বাস সব সৃষ্টির সর্বোচ্চ স্রষ্টা স্কোয়াচ। একটি কুঁড়েঘরে স্কোয়াচের মানুষরূপী মূর্তিটা বসানো ছিল। স্রষ্টাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার জন্য এক যুবক একদিন সেই ঘরে ঢোকে। তাকে শেখানো হয়েছিল এই মূর্তিই তার স্রষ্টা, তার পালনকর্তা। সে যখন মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে মূর্তির সামনে সিজদা করছিল, তখন কুঁড়েঘরের ভেতর একটি নেড়ি কুকুর চুপিসারে ঢুকে পড়ল। লোকটা সিজদা শেষ করে মাথা ওঠাতেই দেখল, একটি কুকুর মূর্তিটার উপর মূত্রত্যাগ করছে।
সে এটা কোনোভাবেই সহ্য করতে পারল না। কুকুরটাকে ধরার জন্য সে উঠে দাঁড়াল। এই ফাঁকে কুকুরটাও ঘরের বাইরে বেরিয়ে যায়। অপমানের জ্বালায় দগ্ধ সেই যুবক বহুদূর পর্যন্ত তাড়া করে ফিরল কুকুরটাকে। ক্রোধ কিছুটা কমে আসার পর সে শান্ত হয়ে বসল। হঠাৎ তার মনে এই বোধোদয় হলো যে, এই মূর্তি কখনোই মহাবিশ্বের প্রভু হতে পারে না। নিজের মনের সাথে ক্রমাগত যুদ্ধ করে সে শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাল যে, এই মূর্তি তার স্রষ্টা নয়; স্রষ্টা নিশ্চয়ই অন্য কেউ।
শুনতে যতই আশ্চর্যজনক মনে হোক না কেন, এই যুবকের জন্য এটাই ছিল স্রষ্টার পক্ষ থেকে নিদর্শন। জন্মের পর থেকে মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে স্রষ্টা মানুষকে তাঁর বিভিন্ন নিদর্শন দেখিয়ে থাকেন। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন সময়ে তিনি মানুষকে তাঁর নিদর্শন দেখান। বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে মানুষের অন্তরে তিনি এই ইঙ্গিত দেন যে, স্রষ্টার অস্তিত্ব রয়েছে, স্রষ্টা একজনই এবং তিনি এক ও একক আল্লাহ।
— স্রষ্টা ও ধর্ম জীবন, ড. বিলাল ফিলিপ্স।
Advertisements